শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) সহসভাপতির (ভিপি) দায়িত্ব নিচ্ছেন নুরুল হক। শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলনে নুরুল নিজেই দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়টি জানান।
১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে বিজয়ী হওয়ার পর নুরুল দায়িত্ব নেবেন কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। আজ এ ব্যাপারে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের এই নেতা। কাল শনিবার ডাকসুর নবনির্বাচিত কমিটির প্রথম সভা ও অভিষেক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। নুরুলের সঙ্গে তাঁর প্যানেলের সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনও দায়িত্ব নেবেন।
ডাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে বাকি ২৩টি পদেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের প্যানেল জয় পেয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে আগামীকাল অনুষ্ঠেয় ডাকসুর কার্যকরী সভায় আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করব। পুনর্নির্বাচনের দাবিসহ শিক্ষার্থীদের অন্য যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো সমাধান করতে আমাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে। পুনর্নির্বাচনের চাওয়া আমাদের বরাবরের মতোই রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম এবং ডাকসু নির্বাচনের অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরও বেগবান করার জন্য আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব অঙ্গসংগঠন বা কথা বলার জায়গা রয়েছে, সেসব জায়গায় অনিয়ম নিয়ে কথা বলতেই আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি।’
দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দাবি করে নুরুল হক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে মেধাভিত্তিক সুস্থধারার ছাত্র রাজনীতির পরিবর্তে অর্থ ও পেশিশক্তি–নির্ভর অপরাজনীতির বিকাশ ঘটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ছাত্রী হল আর বিজয় একাত্তর হল ছাড়া অন্য হলগুলো প্রশাসন যেন ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের কাছে ইজারা দিয়েছে। যে মেধা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে, সেই মেধা ও অর্থনৈতিক অবস্থা দেখেই হলে তাঁদের আসন নিশ্চিত করতে হবে। কোনো শিক্ষার্থীকে জোর করে মিছিল-মিটিং করানো যাবে না এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউকে হলে সিট দেওয়া যাবে না৷’
সংবাদ সম্মেলনের সূচনা বক্তব্যে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘ডাকসুতে নির্বাচিত নুরুল হক ও আখতার হোসেনের দায়িত্ব গ্রহণের ব্যাপারে আমাদের সংগঠন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ সাধারণ শিক্ষার্থীর ম্যান্ডেটকে প্রাধান্য দিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দাবি করে পরিষদ থেকে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা রাশেদ খাঁন বলেন, ‘ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন হলে অনিয়ম হয়েছে। রোকেয়া হলের মেয়েরা হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছেন, যা এখনো মেনে নেওয়া হয়নি। আমরা রোকেয়া হলের আন্দোলনকারী ছাত্রীদের সঙ্গে একাত্মতা জানাচ্ছি এবং রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করছি৷’
পরিষদ থেকে ডাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ফারুক হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা নুরুল হককে ভিপি পদে নির্বাচিত করেছে। আমরা তিন দিন ধরে শিক্ষার্থীদের মোটিভ ও মতামত জানার চেষ্টা করেছি৷ অধিকাংশ শিক্ষার্থী মনে করে, নুরুলের দায়িত্বভার গ্রহণ করা উচিত। কলঙ্কিত নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে, তাকে ত্বরান্বিত করার জন্য নুরুলের দায়িত্ব নেওয়া উচিত। এ ছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সমস্যা সমাধানেও তিনি কাজ করে যাবেন।’